চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর নিয়ে মহাপরিকল্পনা ও সেখানে বসবাসরত ভূমিদস্যুদের হাত থেকে সরকারি জায়গা দখল মুক্ত করার বিষয়ে সভা শনিবার (৩০ জুলাই) সকালে সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। সলিমপুরে ভূমিদস্যু সৃষ্ট সব প্রতিবন্ধকতা প্রতিহত করার জন্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব। তিনি সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করেন।
সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, সিএমপির কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক, সিডিএর চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনসহ সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ রাজনৈতিক নেতারা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।
নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ জঙ্গল সলিমপুরকে কেন্দ্র করে একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠি দীর্ঘ দিন ধরে বনভূমি ধ্বংস করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে সরকারি খাস জমি অর্থের বিনিময় দখল বিক্রি করে আসছে। যেখানে পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে প্রতিনিয়ত পাহাড় ধ্বসের আতঙ্ক নিয়ে বসবাস করে আসছে হাজারো পরিবার। এছাড়াও জঙ্গল সলিমপুর এখন সন্ত্রাসী গোষ্ঠির একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। সন্ত্রাসীরা অভিনব কায়দায় বনভূমি ধ্বংস ও খাস জমি বিক্রি করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
সভায় জঙ্গল সলিমপুর মহাপরিকল্পনায় প্রস্তাবিত বিভিন্ন প্রকল্প সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয়। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে স্পোর্টস ভিলেজ, হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, সাফারি পার্ক, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার, উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বেতার সম্প্রচার কেন্দ্র, পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কাস্টমস ডাম্পিং হাউজ, সবুজ শিল্প এলাকা, চট্টগ্রাম সেনানিবাস ও বিএমএ এবং আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন।
সভা শেষে মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, ‘জঙ্গল সলিমপুরে যেন নতুন করে পাহাড় কাটা ও অবৈধ ভূমি দখল না হয়, সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়াও জঙ্গল সলিমপুরে সরকারের গৃহিত মহাপরিকল্পনার বিষয়ে আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে একটি মাস্টার প্ল্যান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
এ সময় জেলা প্রশাসক পাহাড়ের পরিবেশ ও প্রতিবেশ অক্ষুন্ন রেখে চট্টগ্রামবাসীর জন্য একটি সুন্দর মহাপরিকল্পনা বাস্থবায়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।