আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবেশে তাপমাত্রার তারতম্য আসে। আর তাপমাত্রার তারতম্য নানা ধরণের রোগ জীবাণুর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলে। তাই দেখা যায় ফ্লু ও অন্য ভাইরাসজনিত নানা রোগে খুব সহজেই মানুষ আক্রান্ত হয়।
গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপ ও আর্দ্রতা পরিবর্তনের ফলে শরীরে ঘাম হয় প্রচুর। এই অতিরিক্ত ঘামের ফলে নানা জীবাণুর সংক্রমণ বেশি হয়, যা বিভিন্ন অসুস্থতা ও জ্বরের খুব স্বাভাবিক কারণ। গরমকালে কারো কারো অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যায়। ধুলাবালির ফলে চোখ জ্বালাপোড়া দেখা দেয়, চোখে ভাইরাসজনিত রোগের সংক্রমণ হয়। তাছাড়া যারা কৃষক, তাদের মাঝে ফসল তোলার সময়টায় জ্বরের প্রকোপ বেশ বেড়ে যায়। এটা হয় মূলত ফসলের বিভিন্ন আলারজেনের সংস্পর্শে আসার ফলে অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশনের ফলাফল। এছাড়া পেটের নানা সমস্যাও অতিরিক্ত গরমে বেড়ে যায়।
গরমে সাধারণত বাইরের খাবার বা পানীয় বেশি খাওয়া হয়, ফলে পেটের সমস্যা বিশেষ করে নানা পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়।
অন্যদিকে, শীতকালে শুষ্কতার জন্য অ্যালার্জির প্রবণতা অনেক বেড়ে যায়। শুষ্কতায় ত্বক ফাটা, অ্যাকজিমা, সোরিয়াসিস ছাড়াও ঠান্ডা, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও বেড়ে যায়। ঋতু পরিবর্তনের সাথে আসে ফ্লু জাতীয় বিভিন্ন ছোঁয়াচে রোগ, যা খুব দ্রুত একজন থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়ে।
ঠান্ডা বা সর্দির জন্য দায়ী রাইনো ভাইরাস বা করোনা ভাইরাসও একটু ঠান্ডা আবহাওয়া থাকলেই দ্রুত ছড়ায়। আবার শীতের শুষ্ক বাতাসে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের বিস্তার ঘটে দ্রুত এবং সংক্রমণ হওয়ার প্রবণতাকে ত্বরান্বিত করে। ব্যাক্টেরিয়াজনিত ইনফেকশন এবং সাইনাসের সমস্যাও এই সময় বেড়ে যায়। শুকনো বাতাসে ধুলাবালি বেড়ে গিয়ে নানা ধরণের অ্যালার্জির সমস্যাও সৃষ্টি হয়।
ঋতু পরিবর্তন মূলত একটা উপলক্ষ। এ সময় নানা জীবাণুর আক্রমণ ও পরিবেশের পরিবর্তনের কারণেই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়, যার সাথে আমাদের শরীর ঠিক মানিয়ে নিতে পারে না। তাই ঋতু পরিবর্তনের সময় সুস্থ থাকার জন্য চাই সচেতনতা, পর্যাপ্ত ঘুম, শরীরচর্চা ও পরিচ্ছন্ন থাকা। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলবে।
এই শীত মৌসুমে নানা বয়সের মানুষের নানা রোগে আক্রান্ত বা নানা রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। তাই শীত মৌসুমে আমাদের সবাইকেই আরামদায়ক জীবন-যাপনের জন্য একটু বেশি সতর্ক ও সচেতনতা হতে হয়। তবে মনে রাখবেন, সতর্কতা ও সচেতনতা অনেক রোগের আক্রমণ থেকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।
শীত মৌসুমে আমাদের যে সব রোগের প্রকোপ বেড়ে যায় সেগুলো হলো : সর্দি, কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, হাঁপানি, চর্মরোগ ও বাতব্যথা রোগ।
সর্দি কাশি: ঋতু পরিবর্তনের শুরুতে প্রায় সব লোকই কম-বেশি সর্দি কাশিতে ভুগে থাকেন। তার সাথে যুক্ত থাকে জ্বর। নাক দিয়ে বারবার পানি ঝরতে থাকে এবং হাঁচি হয়। মাঝে-মধ্যে মাথা ব্যথা, শরীরে ব্যথা, গলা ব্যথা এগুলো সাধারণ রোগ। এ রোগগুলো সাধারণ উপসর্গ দেখা দেয়। ইনফ্লুয়েঞ্জার মাধ্যমে এ রোগগুলো হয়। তা ছাড়া ভাইরাসজনিত কারণেও এ ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে। সাধারণত যাদের শরীরে এন্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারাই এ রোগে বেশি ভোগে। ভাইরাসের আক্রমণে দেহের দুর্বলতার সুযোগে ব্যাকটেরিয়াও আক্রমণ করতে পারে। আপনার সর্দি যদি খুব ঘন হয় বা হলুদাভ বা কাশির সাথে হলুদাভ বর্ণের কফ আসে তাহলে ধরে নেবেন আপনি ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। খুব বেশি জ্বর, গলাব্যথা এবং কাশি থাকলে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
করণীয় : সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হলে অন্যদের সাথে বিশেষ করে শিশুদের সাথে মেলামেশা ওঠাবসা খুব সতর্কতার সাথে করতে হবে। কারণ হাঁচি কাশির মাধ্যমে শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
হাঁচি দেয়ার সময় নাকে মুখে রুমাল অথবা টিস্যু পেপার ব্যবহার করতে হবে।
যেখানে সেখানে থুথু বা নাকের পানি বা শ্লেষ্মা ফেলা যাবে না।
নিজের ব্যবহৃত রুমাল, গামছা বা কাপড় অন্যকে বা শিশুদের ব্যবহার করতে দেয়া যাবে না। তরতাজা পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে।
শাকসবজি বেশি করে খেতে হবে।
বাসি বা ঠান্ডা খাবার পরিহার করতে হবে।
হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করতে হবে। দারুচিনি, লেবু, এলাচ দিয়ে লাল চা পান করতে পারেন।
বেশি ঠান্ডা লাগলে কান ঢাকা গরম টুপি বা গলায় মাফলার ব্যবহার করতে পারেন।
বাইরে বা রাস্তায় চলাফেরার সময় মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
হাঁপানি: হাঁপানি বা অ্যাজমা জাতীয় শ্বাসকষ্টের রোগ। এ রোগটি শুধু শীতকালের নয়, সারা বছরের। তবে শীতের মৌসুমে তা বেড়ে যায়। তাই তীব্র শীত আসার আগেই সতর্কতা ও সচেতনতা খুবই প্রয়োজন। এতে এ রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং কষ্টের পরিমাণও কমে আসে।
কারণ: যে সব খাবার খেলে অ্যালার্জি হয়, যেমন : চিংড়ি, গরুর গোশত, ইলিশ মাছ ইত্যাদি, বায়ুর সাথে ধোঁয়া, ধুলাবালি, ফুলের রেণু ইত্যাদি শ্বাস গ্রহণের সময় ফুসফুসে প্রবেশ করলে হাঁপানি হতে পারে। বংশগত কারণেও হাঁপানি হতে পারে। শিশুদের সর্দি কাশি থেকেও হাঁপানির সৃষ্টি হতে পারে।
লক্ষণ: হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়।
শ্বাসকষ্টে দম বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়।ঠোঁট নীল হয়ে যায় ও গলার শিরা ফুলে যায়। রোগী জোরে জোরে শ্বাস নেয়।
বুকের ভেতর সাঁই সাঁই শব্দ হয়।
কাশির সাথে সাদা কফ বের হয়।
শ্বাস নেয়ার সময় রোগীর পাঁজরের মাঝে চামড়া ভেতরের দিকে ঢুকে যায়।
রাতে রোগীর শ্বাস নিতে কষ্ট হয় বলে বিছানা ছেড়ে বসে থাকে।
করণীয়: যে সব খাবারে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়, তা পরিহার করতে হবে।
শরীরে ঠাণ্ডা লাগানো যাবে না।
ঘরে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা করতে হবে।
যে সব সংস্পর্শে হাঁপানি বেড়ে যায় তা, থেকে বিরত থাকতে হবে, যেমন : পশুর লোম, কৃত্রিম আঁশ।
ধূমপান, গুল, সাদা পাতা, জর্দার ব্যবহার পুরোপুরি বাদ দিতে হবে।
ডাক্তারের পরামর্শে চলতে হবে।
শ্বাসকষ্টের সময় তরল খাবার খেতে হবে। ধুলাবালুর কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে।
নিউমোনিয়া: নিউমোনিয়া একটি ফুসফুসের রোগ। অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগার কারণে নিউমোনিয়া হতে পারে। শিশু ও বয়স্কদের জন্য এটি একটি মারাত্মক রোগ। পৃথিবীতে পাঁচ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো নিউমোনিয়া।বাংলাদেশেও শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ নিউমোনিয়া। অভিভাবকদের সতর্কতা ও সচেতনতার ফলে এ রোগ থেকে অনেকাংশে বেঁচে থাকা যায়। এ রোগ প্রতিরোধযোগ্য এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময়যোগ্য।
কারণ: নিউমোকক্কাস নামের ব্যাকটেরিয়া এ রোগের অন্যতম কারণ। তা ছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ছত্রাকের আক্রমণে নিউমোনিয়া হতে পারে।
লক্ষণ: ফুসফুসে শ্লেষ্মাজাতীয় তরল পদার্থ জমে কফ সৃষ্টি হয়।
কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হয়।
বেশি জ্বর হয়।
বেশি আক্রান্ত হলে বুকের মধ্যে গড় গড় শব্দ হয়।মারাত্মক শ্বাসকষ্ট হয় এবং শ্বাস গ্রহণের কষ্টে শিশুরা ছটফট করে।
করণীয়: ঠাণ্ডা লাগানো যাবে না। শীত উপযোগী হালকা ও নরম গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে।ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করানো যাবে না। সহনীয় গরম পানিতে গোসল দিতে হবে।
সর্দি কাশি হাঁচিতে আক্রান্ত শিশুরা বা লোকদের কাছে শিশুকে নেয়া যাবে না। হাঁচির মাধ্যমে নানা রোগ ছড়াতে পারে।
শিশুদের কাছে বড়রা হাঁচি কাশিতে আক্রান্ত হলে হাঁচি দেয়ার সময় অবশ্যই রুমাল বা টিস্যু পেপার ব্যবহার করতে হবে।
ধুলাবালু, চুলার ধোঁয়া, মশার কয়েল ও সিগারেটের ধোঁয়া থেকে অবশ্যই শিশুদের দূরে রাখতে হবে।
তরল ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শিশু ঘুমাবার সময় নিচে যদি কাপড় থাকে, তা প্রস্রাব করে ভিজিয়ে ফেলে, তাহলে তা সাথে সাথে সরিয়ে নিতে হবে বা পাল্টাতে হবে। অধিক সময় শিশুর নিচে ভেজা কাপড় থাকলে ঠান্ডা লেগে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
চর্মরোগ: শীতকালে আবহাওয়ার সাথে কম তাপমাত্রার সংযোগ আর ধুলাবালু সব মিলিয়ে আমাদের স্বাস্থ্যের নানা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এ সমস্যার মধ্যে একটি রোগ হলো চর্ম রোগ। শীতকালে এর প্রকোপ বেড়ে যায়। শীতের সময় বাতাসের জলীয় বাষ্প কমে যাওয়ার কারণে চামড়া থেকে পানি চুষে নেয়। এর ফলে ত্বক বা চামড়া শুষ্ক হয়ে ওঠে। এ সমস্যাটি কম-বেশি সব বয়সের নারী-পুরুষের হয়ে থাকে। বিশেষ করে পা, পেটে উভয় দিক এবং ঠোঁট বেশি আক্রান্ত হয়। পায়ে ধুলাবালি লেগে থাকলে পা ফেটে যেতে পারে। তা ছাড়া ঠোঁটের যত্ন না নিলে পুষ্টিকর খাবারের অভাবে ঠোঁট ফেটে যেতে পারে। শীতকালে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা হয়, তাহলো ঠোঁট ফেটে যায়। আমাদের চামড়ার নিচে সিবেসিয়াম নামক আণুবীক্ষণিক গ্রন্থি থাকে, যা থেকে তেলের মতো রস ক্ষরিত হয়। যাকে সিবাম বলে। যা আমাদের শীরের ঘামের সাথে মিশে গিয়ে পুরো চামড়ায় ছড়িয়ে যায় এবং চামড়া মসৃণ ও চামড়ার আর্দ্রতা বজায় রাখে। আর শীতকালে বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে সিবেসিয়াম গ্রন্থি থেকে বের হয়ে আসা শরীরের চামড়ায় ঠিকমতো ছড়িয়ে পড়তে পারে না। ফলে শরীরের চামড়া শুকিয়ে গিয়ে কুঁচকে যায় বা টানটান ভাব দেখা দেয়। অপর দিকে আমাদের ঠোঁটের চামড়া শরীরের অন্য অংশের চেয়ে পাতলা। তা ছাড়া নাকের নিচে ঠোঁট থাকায় আমাদের দেহের গরম বাতাস নাক দিয়ে বের হওয়ার সময় বা নিঃশ্বাসের সময় ঠোঁট আরো শুকিয়ে দেয়, তাই শীতকালে ঠোঁট বেশি ফাটে। তা ছাড়া যারা বার বার জিহ্বা ঠোঁট ভিজিয়ে রাখে তাদের ঠোঁট বেশি ফাটে। সরাসরি সূর্যালোকের কারণে যে কোনো ঋতুতেই ত্বক শুষ্ক হতে পারে। আবার সাবান, ক্লিনজার ডিটারজেন্টে ক্ষার থাকে, যা ত্বকের ময়লা পরিষ্কারের সময় ক্ষার ত্বকের বা চামড়ার পানি ও তেল চুষে নেয়, ফলে ত্বক শুকিয়ে যায়। আবার প্রয়োজনীয় পানি পান না করলে দেহে পানির অভাবে চামড়া শুকিয়ে যায়।
করণীয়: যাদের এমন সমস্যা দেখা দেয় তারা অল্প গরম পানিতে কম সময় গোসল করুন।
যতটা সম্ভব কম ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করুন। গোসলের পর শরীরে ময়েশ্চারাইজার যেমন : পেট্রোলিয়াম জেলি, গ্লিসারিন, বিভিন্ন লোশন ব্যবহার করুন।
শীত মৌসুমে খাঁটি অলিভ অয়েল সারা শরীরে ব্যবহার করুন। এতে শরীরের চামড়া ফাটবেও না মসৃণও হবে এবং শীতও কম লাগবে।
হাত পা ও ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন।
ত্বককে সুরক্ষা রাখতে ভ্যাসলিন, গ্লিসারিন, অলিভ অয়েল, সরিষার তেল ব্যবহার করুন। বেশিক্ষণ রোদে থাকবেন না।
কড়া আগুন পোহাবেন না। এতে চামড়ার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
শীতে মাথায় খুশকি হয়, তাই একটু ঘন ঘন শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত। শীত মৌসুমে চামড়ায় খোসপাঁচড়া হতে পারে। তাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
ব্যথাবেদনা: আমাদের দেশে বেশির ভাগ পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তিরাই শরীরের নানা বিষ বেদনায় ভোগেন। এ দেশে ৫০ ঊর্ধ্ব জনসংখ্যার শতকরা ৬৫ ভাগই ব্যথাজনিত সমস্যায় ভোগেন। বিশেষ করে যে সব জয়েন্ট শরীরের ওজন বহন করে এবং বেশি ব্যবহৃত হয় সেগুলো ব্যথা-বেদনা বেশি হয়। ঘাড়, কোমর, সোল্ডার জয়েন্ট, হাঁটুর ব্যথা, পায়ের ব্যথা ও মেরুদণ্ডের ব্যথা উল্লেখযোগ্য। শীরের নানা অংশে সমস্যার কারণ মেরুদণ্ডের মাংসপেশি বা কশেরুকার সমস্যা, লিগামেন্ট মসকানো, দুই কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্ক ক্ষয় হয়ে যাওয়া বা সমস্যা। আর বয়সজনিত হাড় ও জোড়ার ক্ষয়।
করণীয়: ব্যথা-বেদনা বেশি হলে কমপক্ষে ৭ দিন বিশ্রামে থাকুন।
ব্যথার জায়গা ১০-১৫ মিনিট গরম বা ঠান্ডা সেঁকা দিন।
বিছানায় ঘুমাবার সময় যে কোনো এক দিকে কাত হয়ে হাতের উপর ভর দিয়ে শোয়া ও ওঠার চর্চা করুন।
ঘাড় নিচু করে কোনো কাজ করবেন না।
পিঁড়ি, মোড়া বা ফ্লোরে না বসে চেয়ারে মেরুদণ্ড সোজা করে বসুন।
শক্ত সমান বিছানায় ঘুমাবেন।
মাথায় বা হাতে ভারী বোঝা বহন করবেন না।
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখুন।
পেট ভরে খাবেন না। বরং অল্প অল্প করে কিছুক্ষণ পর পর খাবেন।
কোনো প্রকার মালিশ করবেন না।
সিঁড়িতে ওঠার সময় ধীরে ধীরে হাতল ধরে উঠবেন।
অনেক সময় এক জায়গায় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না।
মহিলাদের ক্ষেত্রে হাইহিলযুক্ত জুতা ব্যবহার করবেন না।
ঘুমাবার সময় মধ্যম আকারের বালিশ ব্যবহার করুন।
দাঁড়ানো থেকে হঠাৎ করে নিচু ভারী জিনিস ধরবেন না বা তুলবেন না। যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর শীত ও করোনায় আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচতে মানুষকে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
লেখক: কো-চেয়ারম্যান, হোমিওবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, চট্টগ্রাম