আগামী ১১ ডিসেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে ছোট পর্দার নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীর প্রথম চলচ্চিত্র ‘বিশ্ব সুন্দরী‘।
সম্প্রতি সিনেমাটির দুই মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের একটি ট্রেইলার ইউটিউবে দেয়া হয়েছে। সিনেমা প্রেমীরা অধীর আগ্রহে করোনাকালীন মুহূর্তে সিনেমা দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন।
বাণিজ্যিক ধারার কোনো নির্মাতা হল শুন্য থাকার ভয়ে, তাঁদের সিনেমা মুক্তি দিতে আসছে না। এমন মুহূর্তে চয়নিকা চৌধুরী, তাঁর প্রথম সিনেমা মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে। এতেই বুঝা যায়, তিনি চলচ্চিত্রকে কতটা ধারণ করেন। অবশ্য ইতোমধ্যে আরও কিছু চলচ্চিত্র নির্মাতাও একই পথে হাঁটছেন। সবাইকে একই সাথে দর্শকের পক্ষ থেকে অগ্রিম সাধুবাদ দিতেই হয়।
যে বিষয়ে লিখতে বসেছি, ‘বিশ্ব সুন্দরী’র ট্রেইলার নিয়ে অনেকে নানা কথা বলছেন। কেউ পক্ষে বলছেন, আর কেউ নির্মাণ নিয়ে বিপক্ষে চুল ছেড়া আলোচনা-সমালোচনা করছেন। বিষয়টা ব্যক্তিগতভাবে আমি ইতিবাচক অর্থে দেখি। তবে বেশিরভাগ কথাবার্তা বা লেখা চোখে পড়েছে চলচ্চিত্রটির নির্মাণ বিষয়ে নেতিবাচক ধারণা। যা আমার মোটেও ভালো লাগেনি। চলচ্চিত্রটি পুরোটা না দেখে, মানুষ কিভাবে স্ট্রংলি এতো নেতিবাচক কথাবার্তা লিখতে পারে?
‘বিশ্ব সুন্দরী’র নির্মাণে বেশিরভাগ কথা উঠেছে চলচ্চিত্রটির রঙের মনস্তত্ত্ব নিয়ে, ইংরেজিতে সম্ভবত কালার গ্রেডিং বলা হয়। আপনাকে প্রথমে ভাবতে হবে, নির্মাতার এটি প্রথম কোনো চলচ্চিত্র। তাছাড়া, যারা এসব বিষয় নিয়ে উঠেপড়ে লেগেছেন, চলচ্চিত্রটি দেখবেন না কিংবা দেখলেও একটি টেলিফিল্ম দেখতে যাবেন, এমনটা ভেবে ফেলেছেন। তাদের বলছি, লেখা কিংবা বলা যতটা সহজ, মাঠে নেমে গোল করা ততটাই কঠিন। সবাই মেসি না, আস্তে আস্তে মেসি হয়ে উঠেন।
যতগুলো সংলাপ আমার কানে লেগেছে, সবগুলোই তো ভালো লেগেছে। নাটকের সংলাপ মনে হয়নি। আবহসংগীতও বেশ শ্রুতিমধুর। যারা সামান্য ট্রেলার দেখে গুণী শিল্পীদের অভিনয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তারা মোটেও শিল্পের লোক নন। তারা এজ ইজুয়াল দর্শকই। তাদের লেখায় কিংবা মুখে, শিল্পের সমালোচনা শোভা পায় না। সমালোচনার উপস্থাপনে যাঁরা মারমুখী, অসুন্দর কথা সুন্দর করে বলতে জানেন না, তারা সমালোচনা করেন না, করেন অন্যের মান নষ্ট করার পায়তারা।
‘বিশ্ব সুন্দরী’ আমার কাছে ট্রেইলার দেখে একটি সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র মনে হয়েছে। যদিও চলচ্চিত্রটি বাণিজ্যিক ধারার কম্বিনেশনে তৈরি। সিয়ামের লুক অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। আমিও জানি, ট্রেইলার দেখে যা মনে হল, চলচ্চিত্রটির নির্মাণে অন্যান্য বাণিজ্যিক ধারার চলচ্চিত্রের চেয়ে অনেকখানি ঘাটতি রয়েছে। আমি বলব না, কিছুই হয়নি। তবে যা হয়েছে, তা আমার কাছে পবিত্র। নেতিবাচক সমালোচনা দিয়ে নিচে নামানোর মতো যোগ্যতা আমার নেই। চয়নিকা চৌধুরী যা-ই বানিয়েছেন, তা-ই আমার কাছে নান্দনিক, শিল্পসম্মত।
আমার কাছে চিত্রগ্রহণ ও ট্রেইলারের সম্পাদনাও ভালো লেগেছে। চলচ্চিত্রের গানগুলোও দারুন ও চমৎকার। পুরো ট্রেইলার জুড়ে একটা সুন্দর ও সুস্থ ধারার সিনেমার গন্ধই পেয়েছি। আপনাদের সাথে আমার অনুভূতি নাও মিলতে পারে। খারাপ লাগাকে খারাপভাবে উপস্থাপন করার মানুষ আমি নই। শিল্প মন থাকলে, খারাপ লাগাকেও ভালো লাগার মতো করে বলা যায়। তাতে একজন শিল্পী, তাঁর শিল্পের প্রতি আরও যত্নবান হোন। শিল্পকে আরও বেশি ভালোবাসতে শুরু করেন।
চয়নিকা চৌধুরীর ‘বিশ্ব সুন্দরী’ সিনেমার সাফল্য কামনা করি। সকল নেতিবাচক লেখালেখিকে ইতিবাচক অর্থে নিবেন, সে আশা রেখে লেখার সমাপ্তি ঘোষণা করলাম। তাছাড়া সিয়াম-পরীমনি জুটির আরও সিনেমা হওয়া দরকার। অনেক দিন চলচ্চিত্রের সফল জুটি আলমগীর-চম্পার অভিনয় দেখিনি, সে আশাও পূর্ণ করতে যাচ্ছে ‘বিশ্ব সুন্দরী।’ অন্য দিকে, মনিরা মিঠু আমার প্রিয় একজন অভিনেত্রী, তাঁকেও এ সিনেমায় দেখতে পাব বলে, খুশি লাগছে।
‘বিশ্বসুন্দরী’র ট্রেইলারে কয়েকটি সংলাপ আমার খুব ভালো লেগেছে। তার মধ্যে ‘তোমার কাছে প্রেম মানে কী?’ ‘বিদায় নিয়ে যাওয়ার সময় একটুখানি ফিরে তাকানো।’ ‘যারা সবকিছু সহজে ভুলে যায়, তারা জীবনে সব থেকে বেশি সুখী হয়।’