ঢাকাবৃহস্পতিবার, ২৩শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মানুষের নষ্ট মানসিকতার বেড়াজাল থেকে শুধু নারী নয়, মানুষের মুক্তি চাই

মোহাম্মদ আলী
মার্চ ৭, ২০২১ ৬:২১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

উদীয়মান, তরূণ, প্রতিশ্রুতিশীল ও সুশ্রী সাংবাদিক শারমিন রিমা। চট্টগ্রামের গণমাধ্যম রাজ্যের অতি পরিচিত মুখ, যিনি একজন আবৃত্তি শিল্পীও। সাংবাদিকতা করেছেন এশিয়ান টিভি চট্টগ্রাম ব্যুরো, চট্টগ্রাম প্রতিদিনে। বর্তমানে ফ্রিল্যান্স কন্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ করছেন দৈনিক সমকাল চট্টগ্রাম ব্যুরোতে। পাশাপাশি আর্টিকেল নাইনটিন নামে একটা এনজিওতে জব করছেন। ৮ মার্চ আন্তজার্তিক নারী দিবস উপলক্ষে পরম বাংলাদেশডটকমের মুখোমুখি হয়েছেন এ নারী রিপোর্টার।

নাম ও ডাক নাম: শারমিন রিমা
জন্ম সাল ও তারিখ: ৬ আগস্ট, ১৯৯৬
জন্মস্থান: চাঁদপুর
বেড়ে ওঠা: চট্টগ্রাম
লেখাপড়া: চট্টগ্রাম কলেজে অর্থনীতি বিষয় নিয়ে স্নাতকোত্তর

পেশা: সাংবাদিকতা
বাবার নাম ও পেশা: বাবা আমাদের জীবনে নেই। বাবার কথা মনে এলে সব এলোমেলো লাগে। তিনি যেখানেই থাকুন ভালো থাকুক।

মায়ের নাম ও পেশা: কামরুন নাহার রুমি, গৃহিণী
ভাই-বোনের সংখ্যা, তাদের নাম ও পেশা:
আমরা তিন বোন এক ভাই। এর বেশি ব্যক্তিগত তথ্যগুলো দিতে চাইছি না।

অনুপ্রেরণা: আমার মা
প্রিয় মানুষ: অবশ্যই মা

প্রিয় সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব: দেশের ভেতরে বাইরে অনেকেই আছেন। তবে খালেদ মহিউদ্দিন ভাই আর নবনীতা চৌধুরীকে আপাকে অন্য রকম ভালো লাগে। এছাড়া দেশের বাইরে যাদের লেখা প্রতিনিয়ত পড়ি তাদের কয়েকজন লিসা কক্স, এলুইজ ফওলার এবং মিশেল এ্যারো।

প্রিয় খাবার: খাবারের ব্যাপারে কোন না নেই। চাইনিজ খাবার ভালো লাগে। তবে একেবারে পছন্দের খাবারের কথা যদি বলা হয় তবে সেটা কাচ্চি বিরিয়ানি।

প্রিয় ফুল: বকুল, দোলনচাপা

প্রিয় মুখ: মা আর কাছের মানুষেরাই তো প্রিয় হবে, তাই না?

অবসরে কি করেন?
রিমা: বই পড়ি আর সিনেমা দেখি।
পুরস্কার, সম্মাননা, স্বীকৃতি, সাফল্য: স্কুল জীবনের অনেক অর্জন রয়েছে। আলাদা করে লিখতে গেলে রচনা হয়ে যাবে। তবে স্কুলের গন্ডির বাইরে উল্লেখযোগ্য পুরষ্কার পেয়েছি ২০০৪ সালে। সেবার জেলা পর্যায়ে কবিতা আবৃত্তিতে প্রথম হই। তাছাড়া স্কুলের বাইরের জগৎ দেখা হয়নি বললেই চলে।

নিজের সম্পর্কে কি অভিমত আপনার কি?
রিমা: ভীষণ পজিটিভ একজন মানুষ। যে কোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করি। যা হবে হোক, মাঝ নদীতে হাল ছাড়বো না। এছাড়া নতুন নতুন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি। আরেকটা মূলমন্ত্র হচ্ছে, পাছে লোকে অনেক কথা বলে এবং বলবে – সে সবে একেবারেই মাথা ঘামাতে যাই না। লোকের কাজ নিন্দা করা আর লোকে তাই করবে।

সাংবাদিকতা নিয়ে আপনার ভাবনা কি?
রিমা: সাংবাদিকতা করতে গিয়ে অল্পস্বল্প কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। সে সব কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সভ্যতা নিয়ে আলাদা একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা।

সাংবাদিকতায় আসার গল্পটা কেমন ছিল?
রিমা: ইচ্ছে ছিল কথাবন্ধু মানে রেডিও জকি হবো সেই জন্যই ২০১৩ সালে ভর্তি হই প্রমা আবৃত্তি সংগঠনে। সেখানেই প্রতিবেদন লেখার প্রাথমিক ধারণা পাই। ধীরে ধীরে লেখালেখির প্রতি আগ্রহ জন্মে। সেই সুবাদে স্থানীয় দৈনিকে টুকটাক লেখার সুযোগ পাই। সময়ের সাথে সাথে দেখলাম আগ্রহটা আরো প্রবলভাবে অনুভব করতে শুরু করছি। সেই থেকে যে শুরু, নেশার মত হয়ে গেছে…

সাংবাদিকতা ছাড়া আপনার অন্যান্য কাজ রিমা: সাংবাদিকতার বাইরে আমি একজন বাচিক শিল্পী। তাছাড়া গত ফেব্রুয়ারিতে ইন্টারন্যাশনাল এনজিও (আর্টিকেল নাইন্টিন) এর ছোট একটা প্রজেক্টের সাথে যুক্ত হয়েছি।

এখন কি নিয়ে ব্যস্ত?
রিমা: চারদিকে শুধু নিউজ আর নিউজ!

আপনার সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
রিমা: সাংবাদিকতা নিয়ে যতই বই পড়ি না কেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার একটা আলাদা রকম গুরুত্ব রয়েছে। যেহেতু প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকতা বিষয়ে আমার পড়াশোনা নেই, তাই এ বিষয়ে বাড়তি নজর দেব। এক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।

চট্টগ্রামে গণমাধ্যমে নারীদের উপস্থিতি ও অবস্থান কেমন?
রিমা: উপস্থিতির সংখ্যাটা যদি বলতে হয়, তবে বলতে হবে এটা একেবারেই নগণ্য। আর যদি অবস্থানের কথা বলি তাহলে উপস্থিতির সংখ্যার দিকে তাকালেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। এটুকুই বলবো সাংবাদিকতায় টিকে থাকাটা বিরাট চ্যালেঞ্জিং একটা বিষয়।

সাংবাদিকতায় আপনি কোনো চ্যালেঞ্জের/সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন?
রিমা: হুঁ। ২০১৯ এবং ২০২০ সালে প্রতিবেদনের রেশ ধরেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলাম।

আপনার সামাজিক কাজ:
রিমা: প্রথমত, একজন নাগরিক হিসেবে সমাজের প্রতি অবশ্যই আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাই ব্যক্তি মানুষ হিসেবে সে সব পালনের চেষ্টা করি। প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, প্রথম আলো বন্ধুসভা, সমকাল সুহৃদ সমাবেশের সাথে যুক্ত হয়েও সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করি।

সাংবাদিকতা নিয়ে আপনার কাজ:
রিমা: প্রতিনিয়ত কাজ করছি এবং শিখছি। তাই কাজের শেষ নেই।

৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আপনার বক্তব্য/চাওয়া/আহ্বান কি?
রিমা: আক্ষেপ নিয়ে বলতেই হয়, নারী স্বাধীনতা এখন কেবলই একটি দিবস, একটি উৎসব! সেটা বই-পুস্তক আর সভা সমাবেশে বক্তার দেয়া বক্তৃতায় নীতিকথার বুলি। যতই নীতিবাক্য আওড়ানো হোক না কেন, চিন্তা চেতনায় কেউ স্বাধীনতা ধারণ করে না। মানুষের এ নষ্ট মানসিকতার বেড়াজাল থেকে শুধু নারী নয়, মানুষের মুক্তি চাই।

গণমাধ্যমের জন্য আপনার কোন সুপারিশ আছে?
রিমা: আমি ছোট। নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে যারা আছেন, তাদের দিকেই তাকিয়ে আছি।

সাংবাদিকতায় আসতে ইচ্ছুক নারীদের প্রতি আপনার বক্তব্য কি?
রিমা: শখের বশে সাংবাদিকতা করতে চাইলে এ পেশায় আসবেন না। আর যদি জীবন যাপনের একমাত্র আশ্র‍য় হিসেবে নিতে চান, তাহলেও এক কথায় পরামর্শ থাকবে ‘ভুলেও এ পথে পা বাড়াবেন না’।

Facebook Comments Box