ঢাকা: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পোশাক শিল্পের রপ্তানি পণ্য চুরি প্রতিরোধের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিজিএমইএ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বাংলাদশ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার (১২ জুলাই) অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
সভায় বিজিএমইএ এর সভাপতি ফারুক হাসান ও সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি এসএম মান্নান (কচি), সহ-সভাপতি মো. শহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন, পরিচালক মো. খসরু চৌধুরী ও পরিচালক হারুন উর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ফারুক হাসান বলেন, ‘ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে দীর্ঘ দিন ধরে পোশাক খাতের রপ্তানি ও আমদানির মালামাল চুরির ঘটনা ঘটে আসছে। এটা মাঝখানে বন্ধ ছিল। এখন আবার ঘন ঘন ঘটছে। এ মহাসড়কে একটি সংঘবদ্ধ শ্রেণি চক্র কাভার্ডভ্যানের চালকদের সাথে যোগসাজশ করে রাতের বেলায় কাভার্ড ভ্যান দাঁড় করিয়ে মালামাল চুরি করছে। অনেক সময় কার্টুনের ওজন ঠিক রাখার জন্য তারা কার্টুনে ঝুট, মাটি ইত্যাদিও ভরে দিচ্ছে। পরবর্তী যখন ওই রপ্তানি পণ্য আমেরিকা ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে, তখন কাটুন খুলে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পোশাক পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ আসছে। এতে করে এক দিকে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন, অন্য দিকে, দেশের সুনামও নষ্ট হচ্ছে, যা মোটেও কাম্য নয়।’
বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে এ চুরি বন্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
পুলিশের মহা পরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ চুরি প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাবনা দিয়ে বলেন, ‘এ কমিটি চুরি বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার জন্য এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিউর) নির্ধারণ করার কাজ করতে পারে।’
হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শক মল্লিক ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘চুরি প্রতিরোধে রপ্তানি পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানে বিশেষ স্টিকার দেয়া যেতে পারে।’ বিজিএমইএ সভাপতি এ প্রস্তাবনার সাথে একমত পোষণ করে বলেন, ‘এ ব্যাপারে বিজিএমইএ এর সদস্যদেরকে অবহিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘পোশাক শিল্প দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি। এ শিল্পে সুষ্ঠু আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখাসহ সব সহযোগিতা প্রদানে ন্ত্রণালয় সদা তৎপর রয়েছে। মহাসড়কে যেভাবেই হোক, রপ্তানি পণ্যের চুরি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতেই হবে। এ ব্যাপারে বর্তমান সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স।’
মন্ত্রী চুরি বন্ধের জন্য উপস্থিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর নির্দেশনা দেন। তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকা-চট্রগ্রাম মহসড়ককে সিসিটিভির নজরদারিতে আনার জন্য এ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সিসিটিভির ক্যামেরা স্থাপনের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে, যা আগামী চার মাসের মধ্যে সমাপ্ত হবে।’
মন্ত্রী ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে চুরি বন্ধের জন্য অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শক, হাইওয়ে পুলিশকে প্রধান করে বিজিএমইএ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এবং বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে দেন। এ কমিটির মূল কাজ হবে চুরি বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার জন্য এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিউর) নির্ধারণ করে দেয়া।
চুরি বন্ধের জন্য হাইওয়ে পুলিশ এখন থেকে শুধুমাত্র হাইওয়ে নয়, সংযুক্ত ফিডার রোডগুলোতেও টহলদারি ও তদারকি আরো জোরদার করবে বলে জানান মন্ত্রী।