ঢাকাবুধবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

প্যাকেটের গায়ের দামে সিগারেট বিক্রি নিশ্চিত করা জরুরি

ঢাকা
মার্চ ১৩, ২০২৩ ৬:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঢাকা: দেশে সব পণ্য প্যাকেটে উল্লিখিত সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় ‍দামে বিক্রি হলেও সিগারেট ও বিড়ির ক্ষেত্রে তা অনুসরণ করছে না উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। পুরো দেশে সর্বোচ্চ দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে সিগারেট বিক্রি হওয়ায় সরকার প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও সকারের রাজস্ব ফাঁকি বন্ধে প্যাকেটের গায়ের দামে সিগারেট বিক্রি নিশ্চিত করা জরুরি বলে জানিয়েছেন তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞরা।

রোববার (১২ মার্চ) সকালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কনফারেন্স হলে ‘তামাক কর নীতি ব্যবস্থায় কোম্পানির ফাঁকি: জনস্বাস্থ্য রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক সাংবাদিকদের জন্যে আয়োজিত কর্মশালায় তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো ও বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।

কর্মশালায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক গবেষক ও একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুশান্ত সিনহা।

তিনি বলেন, ‘তামাক কোম্পানিগুলো ‘আইন সংশোধন হলে রাজস্ব কমে যাবে’ বলে ভয় দেখায়। ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাশ ও ২০১৩ সালে আইনটি সংশোধনের সময়ও তারা একই ধরনের প্রচারণা চালিয়েছে। কিন্তু, বাস্তবতা হল, গত দশ বছরে তামাক খাত থেকে সরকারের রাজস্ব তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আইন প্রণয়নের ফলে তামাক ব্যবহারের হার কমলেও রাজস্ব আয় কখনোই আগের বছরের তুলনায় কমেনি। ফলে, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণের খসড়াটি পাস করার পাশাপাশি একটি তামাক করনীতি প্রণয়ন করতে হবে।’

সুশান্ত সিনহা আরো বলেন, ‘সরকারের রাজস্ব বাড়াতে ও ফাঁকি বন্ধ করতে অ্যাড ভ্যালোরেম করারোপ পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট করারোপ পদ্ধতি আরোপ করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিটি দ্রব্যের বাজার ও বিক্রয় পর্যবেক্ষণে এবং কর আদায়ে ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু করতে হবে। একইসাথে সিগারেট ও বিড়ি প্যাকেটের দামে বিক্রি নিশ্চিত করতে হবে।’

প্রধান অতিথির বক্তেব্যে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী হোসেন আলী খন্দকার বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ও তামাক নিয়ন্ত্রণে সাংবাদিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি। তামাক কোম্পানির কূটকৌশল তুলে ধরার পাশাপাশি জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে হবে। একইসাথে বিভিন্ন পরিসংখ্যান ও তথ্য দিয়ে নতুন নতুন প্রতিবেদনের মাধ্যমে সরকারকে তামাক নিয়ন্ত্রণে সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ, বিষয়টি পুরো দেশের জনস্বাস্থ্যের সাথে জড়িত।’

আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন বলেন, ‘বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রতিদিন সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকা ভোক্তার পকেট থেকে অতিরিক্ত চলে যাচ্ছে। যা মাসে প্রায় ৬০০ কোটি আর বছরে দাঁড়ায় প্রায় সাত হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এ রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ হলে সেই টাকার দিয়ে পুরো দেশের মানুষের হৃদরোগের চিকিৎসা বিনামূল্যে করা সম্ভব হবে।’

বিএনটিটিপির প্রজেক্ট ম্যানেজার হামিদুল ইসলাম হিল্লোলের সঞ্চালনায় কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন গণ মাধ্যমে প্রতিনিধি, তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ ও উন্নয়ন কর্মীরা নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন ও নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।

Facebook Comments Box