চট্টগ্রাম: কোভিড-১৯ জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সার্বিক কার্যাবলি ও চলাফেরায় সরকারী নিষেধাজ্ঞার সময় চট্টগ্রাম নগরীর অস্বচ্ছল নরসুন্দর ও চর্মকারদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) বিকালে কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে ৪০০ জন নরসুন্দর ও চর্মকারের মাঝে এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
প্রতি প্যাকেট উপহার সামগ্রীর মধ্যে ছিল পাঁচ কেজি চাল, এক কেজি ছোলা, দুই কেজি আলু, এক কেজি চিনি, সেমাই এক প্যাকেট, চিড়া এক কেজি, চা পাতা ১০০ গ্রাম।
মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. বদিউল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এসএম জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. নাজমুল আহসান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল হাসান ও মামনুন আহমেদ অনিক, স্টাফ অফিসার টু ডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক, এনডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী ও জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা সজীব চক্রবর্তী প্রমূখ।
স্বেচ্ছাসেবক টিম সিপিপি, বেটার ফিউচার বাংলাদেশ, পুর্বাশার আলো, রেড ক্রিসেন্ট, তৃণমুল নাট্যদল, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন ও নির্বাণ ক্লাব ত্রাণ বিতরণ কাজে সহযোগিতা করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এবিএম আজাদ বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে সরকারী বিধি-নিষেধের মধ্যে কর্মহীন হয়ে পড়া কোন অসহায় মানুষ যাতে অভূক্ত না থাকে, তা দেখাশোনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে বলেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সমাজের অস্বচ্ছল মানুষের হাতে সরকার প্রদত্ত উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। কোন হতদরিদ্র পরিবার যাতে সরকারী সহযোগিতা থেকে বাদ না যায়, তা কঠোরভাবে তদারকি করা হচ্ছে।’
মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে যে সব শ্রমজীবি মানুষ একেবারে কর্মহারা হয়ে পড়েছে বা কষ্টে আছে, তাদের প্রত্যেককে ত্রাণের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন। সমাজের দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি বিধি-নিধেষে কর্মহীন নরসুন্দর, মুচি, চর্মকার ও অবহেলিত তৃতীয় লিঙ্গের হিজড়া জনগোষ্ঠীকে ত্রাণ দেয়া হয়েছে। পরিবহন শ্রমিকসহ আরো যারা অতি কষ্টে দিনযাপন করছে, তাদের প্রত্যেককে পর্যায়ক্রমে ত্রানের আওতায় আনা হবে। সরকার ঘোষিত আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিধি-নিষেধ সময় পর্যন্ত ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা চাই এ পরিস্থিতিতে কেউ অনাহারে ও কষ্টে থাকবে না। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে যারা প্রকাশ্যে সাহায্য নিতে সংকোচবোধ করছে বা সাহায্য চেয়ে আমাদের কাছে টেলিফোন ও এসএমএস করছেন তাদের বাসা-বাড়িতে গিয়ে উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। আমাদের কাছে মজুদ থাকা ২০ হাজার প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে নগরীতে এ পর্যন্ত তিন হাজার প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। মহানগরীর বাইরে উপজেলা পর্যায়েও অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।’
করোনায় একেবারে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের সহায়তায় সরকারের পাশাপাশি সমাজের ধনার্ঢ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।