চট্টগ্রাম: সর্বাধুনিক প্রযুক্তি এবং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে দেশের প্রথম অটোমোবাইল হাব তৈরি হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এখানে দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির কারখানা করছে উত্তরা মোটর্স লিমিটেড।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে উত্তরা মোটর্সের কারখানার কাজ অনেকটা এগিয়েছে। এ বছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশি ব্র্যান্ড নামে বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারে আনতে চায় তারা। প্রতিষ্ঠানটি বছরে ৩৫ হাজার ব্যক্তিগত গাড়ি বা প্রাইভেট কার, ৫০ হাজার তিন চাকার যান ও এক লাখ ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল উৎপাদনের লক্ষ্য ঠিক করেছে। উত্তরা মোটর্সের ৩৩ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে সুজুকি ব্র্যান্ডের গাড়ি এসেম্বলিং এবং প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করেছে। স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানটি ভারত, জাপান, থাইল্যান্ডের বিভিন্ন গাড়ির একমাত্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৯৭২ সাল থেকে কাজ করছে। নতুন এ প্ল্যান্টের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৮০০ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। গাড়ি এসেম্বলিং ও প্রস্তুত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বুধবার (২৪ মার্চ) বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সাথে ৫০ একর জমির ইজারা চুক্তি সই করেছে উত্তরা মোটর্স লিমিটেড।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে জিপিএইচ ইস্পাতের স্টার অ্যালাইড ভেঞ্চার ৫০ একর জমি নিয়েছে। আগ্রহী অন্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে রানার অটোমোবাইল, ইফাদ অটোস এবং অটো ইম্পোর্টস লিমিটেড।
বেজার ডেপুটি ম্যানেজার সেনজুঁতি বড়ুয়া জানান, এসব প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অটোমোবাইল খাতে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে প্রস্তাবিত মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৩৩৫ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; যার মাধ্যমে প্রায় সাড়ে সাত হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে জাপানের সুপরিচিত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মিতসুবিশির ভাইস প্রেসিডেন্ট গত বছরের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর পরিদর্শন করেছেন। জাপানের আরেক গাড়ি নির্মাতা কাওয়াসাকিও বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে।
উল্লেখ্য, বেজা চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই ও ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার একর জমির উপর একটি পূর্ণাঙ্গ শিল্প শহর গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে; যার নামকরণ করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর’। শিল্প নগরটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হতে মাত্র দশ কিলোমিটার ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম হতে মাত্র ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এ শিল্প নগরে বিশ্বমানের সব সুবিধাদি থাকবে যেমন- বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, সমুদ্র বন্দর, কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা/পানি শোধনাগার, আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক এলাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল ইত্যাদি। এ লক্ষ্যে বেজা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতায় সংযোগ সড়ক, ভূমি উন্নয়ন এবং প্রতিরক্ষা বাঁধ, ব্রিজ নির্মাণ, গ্যাস সংযোগ লাইন স্থাপন করছে।