চট্টগ্রাম: ‘পুরো পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়েছে তুরুস্কের ভয়াবহ ভূমিকম্প। উন্নয়নের সব পরিকল্পনায় সব সময় দুর্যোগ পরিকল্পনা সংযুক্ত করতে হবে। দেশে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ বেড়েছে। তাই, এসব দুর্যোগের কারণ খুঁজে বের করে যারা দায়ী তাদেরকে আইনের আওতায় আনাসহ বিল্ডিং কোড বাস্তবায়ন, সব উন্নয়নে পাহাড়, জলাশয়, খালবিল প্রকৃতি অক্ষত রাখতে সরকারের কঠোর অবস্থান নিতে হবে। ইটভাটায় নির্বিচারে আবাদি জমির মাটি পোড়ানো এক সময় কৃষি ক্ষেত্রে ভয়াবহ দুর্যোগ নিয়ে আসতে পারে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রশমনমুলক দক্ষতা ও কার্যক্রম কনটিনজেনসি ফান্ড এন্ড প্ল্যান বাড়াতে বেশী মনোযোগী হতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দুর্যোগের তীব্রতা, ধরণ ও ব্যাপ্তি বেড়েছে। পরিবেশ রক্ষা ও দুর্যোগ বিষয়ে তথ্যভান্ডার ভবিষ্যত গবেষণায় কাজে লাগবে। দেশে শিল্প বাড়ছে, ঝুঁকি বাড়ছে। তাই, নিরাপত্তা বিধানে প্রশিক্ষিত কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা বাড়াতে হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় উপযোগী অবকাঠামো তৈরি করতে হবে।’
জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস (১০ মার্চ) উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) ঘাসফুল আয়োজিত ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য দুর্যোগ প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ঘাসফুলের চেয়ারম্যান ও সমাজবিজ্ঞানী ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরী।
ওয়েবিনারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাংসদ ক্যাপ্টেন (অব) এবি তাজুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘দুর্যোগের জন্য আমরা যে খরচ করি, তা জাতির জন্য ইনভেস্টমেন্ট, এক্সপেন্ডিচার নয়।’
স্বাগত বক্তব্য দেন ঘাসফুলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আফতাবুর রহমান জাফরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামাল হোসাইন। প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবির) ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) উপ-উপাচার্য প্রফেসর খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. মাহবুবা নাসরীন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটউটের সহকারী অধ্যাপক ড. আহমেদ ইশতিয়াক আমিন চৌধুরী, একশনএইড বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, স্টার্ট নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ম্যানেজার সাজিদ রায়হান।
উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন মুখ্য সচিব ড. মো. আবদুল করিম, দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের যুগ্মসচিব ও ডিআরএমইপি প্রজেক্টের পরিচালক সুব্রত পাল চৌধুরী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর হেডকোয়ার্টারের উপ পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মো. কামাল উদ্দীন ভূঁইয়া ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপ পরিচালক মো. আব্দুল হালিম, সিভিল সার্জন-চট্টগ্রামের প্রতিনিধি ডাক্তার মো. নুরুল হায়দার, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ পরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার, চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সজীব কুমার চক্রবর্ত্তী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আরবান পরিকল্পনা বিভাগের উপ প্রধান ঈসা আনসারি, ইউএনডিপির সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি সরদার এম আসাদুজ্জামান, কুতুবদিয়া বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম, মহেশখালী মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু হায়দার। ওয়েবিনারে আটটি সুপারিশমালা গৃহীত হয়।
ওয়েবিনারে আরো সংযুক্ত ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমশিনারের প্রতিনিধি (ডিসি ক্রাইম) নিস্কৃতি চাকমা, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-পরিচালক সোনিয়া বেগম, বাংলাদেশ গালর্স গাইড, চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত আঞ্চলিক কমিশনার মোসফেকা আক্তার চৌধুরী, সাংবাদিক জোবায়দুর রশিদ, ঘাসফুলের নির্বাহী সদস্য প্রফেসর ড. জয়নাব বেগম, সাধারণ পরিষদ সদস্য অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান, জাহানারা বেগম, ডাক্তার সেলিমা হক, ঝুমা রহমান, গাউসিয়া কমিটি মানবিক কর্মসূচী চট্টগ্রামের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার, চবির ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিসহ ঘাসফুলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।