চট্টগ্রাম: দুর্নীতি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন কক্সবাজারে চাঞ্চল্যকর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ মডেল থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের স্ত্রী চুমকি কারন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
সোমবার (২৩ মে) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন চুমকি। এরপর জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য-গ্রহণ চলছে।সোমবারও (২৩ মে) সাক্ষ্য-গ্রহণের নির্ধারিত দিন ছিল। সকালে চুমকি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’
গত ১৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদের আদালত দুর্নীতি মামলার চার্জ গঠনের মাধ্যমে প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিলেন।
গত বছরের ২৬ জুলাই আদালতে অভিযোগ পত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন। প্রদীপ গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকলেও এত দিন পলাতক ছিলেন তার স্ত্রী চুমকি।
দুদকের মামলা সুত্রে জানা গেছে, চুমকির চার কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় দুই কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকা। বাকি সম্পদ অর্থাৎ দুই কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
চট্টগ্রাম সিটির পাথরঘাটায় ছয় তলা বাড়ি, ষোলশহরে বাড়ি, ৪৫ ভরি স্বর্ণ, একটি কার ও মাইক্রোবাস, কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাট ও ব্যাংক হিসাবের মালিক সাবেক ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকি। প্রদীপের ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থে স্ত্রী চুমকি এসব সম্পদ অর্জন করেন বলে দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে। এ ছাড়া চুমকি নিজেকে মাছ ব্যবসায়ী দাবি করলেও তার কোন প্রমাণ পায়নি দুদক।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় একই বছরের ৬ আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন প্রদীপ। সিনহা হত্যা মামলায় প্রদীপকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত।