চট্টগ্রাম: দুঃশাসন হটিয়ে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের আহবান জানিয়ে শুক্রবার (২০ মে) সকালে চট্টগ্রামের হাজারী গলির পার্টির কার্যালয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) চট্টগ্রাম জেলা কমিটির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জেলা কমিটির সভাপতি অশোক সাহার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীরের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. শাহ আলম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সদস্য মৃণাল চৌধুরী, চন্দন দাশ, রথীন সেন, রেখা চৌধুরী, কোতোয়ালি থানার সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, সীতাকুণ্ড থানার সাধারণ সম্পাদক মাহবুব চৌধুরী, আহমদ নূর, জামাল উদ্দিন, অয়ন বড়ুয়া, ইমতিয়াজ সবুজ, সাদেক চৌধুরী, মহসিন, দীলিপ দাশ, মৃদুল দে, অনিরুদ্ধ বড়ুয়া, ত্রিদিব রায়, আকবর মোহাম্মদ বাবর, মাহাবুবা জাহান রুমি, ইমরান চৌধুরী।

বক্তারা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর অতিক্রম করেছে। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী জণগণ যে ধরনের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন, দেশ আজ তার উল্টোপথ ধরে চলছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-ধারা ও রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি থেকে বিচ্যুত হয়ে ক্ষমতাসীন সরকার গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বায়নের অধীনস্থ পুঁজিবাদের বাজার ধারায় রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। তাই দেশের বিদ্যমান দুঃশাসন, লুটপাট, শোষণ- বৈষম্যে, অগণতান্ত্রিকতা ও রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে কমিউনিস্ট পার্টি ও বামশক্তিকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করা প্রয়োজন।’

বক্তারা আরো বলেন, ‘জনগণের দৈনন্দিন জীবন-সংকট তীব্রতর হচ্ছে। করোনাকালে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা তিন কোটি বেড়েছে ও নতুন করে আড়াই কোটি কোটি মানুষ বেকার হয়েছে। এ দিকে, কোটিপতিদের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। ধনী আরো ধনী হচ্ছে, গরিব আরো গরিব হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এ অবস্থায় শুধু খেটে-খাওয়া মানুষই নয়, দেশের মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনের সংকট আরো তীব্র হচ্ছে।
মানুষের ন্যূনতম বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু প্রয়োজন, সেই ক্রয় ক্ষমতাও তার নাগালের বাইরে চলে গেছে। আয় অপেক্ষা ব্যয় বেশি হওয়ায় মানুষ নৈমিত্তিক জীবন যাপন করতে হিমশিম খাচ্ছে। দেশে ‘আধাপেট খাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে’। বাজার আজ মধ্যস্বত্বভোগী ও সিন্ডিকেটের দখলে। সরকারের সে বিষয়ে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। উপরন্তু এদের ওপর ভরসা করেই সরকার টিকে আছে।’

‘দেশের সম্পদ লুটপাটের মাধ্যমে বিদেশে চলে যাচ্ছে। দুর্নীতি, লুটপাট, ঋণখেলাপিদের দৌরাত্ব, টাকা পাচার আর মেগা প্রজেক্ট দেশকে সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় প্রয়োজন একটি গণজাগরণের মাধ্যমে কৃষক-শ্রমিক-ক্ষেতমজুর, গরিব মধ্যবিত্তদের ঐক্য গড়ে তুলে সিপিবি-কে শক্তিশালী করে ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ে গণসংগ্রাম বেগবান। মানব মুক্তির জন্য চলমান দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে বাম গণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে হবে।’

প্রেস বার্তা