চট্টগ্রাম: পর্যটন উন্নয়নের নামে বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো সম্প্রদায়ের জমি দখল করে পাঁচতারা হোটেল নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছে যুব ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) সকালে গণমাধামে পাঠানো বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
ইউনিয়নের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি রিপায়ন বড়ুয়া এবং সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল শিকদার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারা হোটেল ও পর্যটন কেন্দ্রের নির্মাণ কাজের ফলে সেখানকার আদিবাসী জনগোষ্ঠী উচ্ছেদ হয়ে পরবে। এতে তাদের জীবন যাত্রা ব্যাহত হবে। এর আগেও আমরা পর্যটনের নামে পাহাড়ী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জমি দখল হতে দেখেছি। বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন এ ধরনের তৎপরতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং দ্রুত এ নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবি জানাচ্ছে।’
বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, ‘পর্যটনের নামে জমি দখলের উন্নয়ন নয় বরং ওই অঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রাথমিক স্কুল ও মাধ্যমিক স্কুলসহ অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা প্রয়োজন। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়ন ব্যতীত শুধুমাত্র হোটেল তৈরির উদ্যোগ জমি দখল ও ভূমি পুত্র ম্রো সম্প্রদায়কে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র বলেই মনে করে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জমি দখলের তৎপরতায় যে বিশৃঙ্খলা ও জানমালের ক্ষতিসাধন হবে তার দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।’
বান্দরবান শহর থেকে ৪৭ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক-থানচি রোডে ‘ম্যারিয়ট হোটেল অ্যান্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক’ নামে একটি ফাইভ স্টার হোটেল তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে। ওই জায়গায় রয়েছে অনেকগুলো গ্রাম যেখানে ম্রো আদিবাসীদের বসবাস। হোটেলের বাস্তবায়নে কাজ করবে শিকদার গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আর আর হোল্ডিংস এবং বাংলাদেশ আর্মির ৬৯ নম্বর ব্রিগেডের ২৪নং ডিভিশন। ইতিমধ্যে দ্যা ইন্টারন্যাশনাল চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস কমিশন (সিএইচটিসি) নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে সুপারিশ করেছে।
উল্লেখ্য, বান্দরবান জেলা শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে ‘বাংলার দার্জিলিং’ খ্যাত চিম্বুক পাহাড়ের অবস্থান। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় দুই হাজার ৫০০ শত ফুট। চিম্বুক যাওয়ার রাস্তার দুই পাশের পাহাড়ী দৃশ্য খুবই মনোরম। চিম্বুকে যাওয়ার পথে সাঙ্গু নদীও দেখা যায়। পার্শ্ববর্তী জেলা কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলাগুলোকে দেখা যায় এখান থেকে। বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের পাশ দিয়ে ভেসে যাওয়া মেঘ দেখে মনে হয়, মেঘের স্বর্গরাজ্য ভাসছে চিম্বুক।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি