আলাদিনের চেরাগের ইভিএম জাদুর মেশিনে প্রহসনের নির্বাচন দেখেছে। এত সুন্দর নির্বাচন চট্টলাবাসী আগে কখনো দেখে নি! গৃহপালিত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মতে, চসিক নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হয়েছে!!!
নির্বাচনে তিন স্তরে নিরাপত্তা প্রদান করা হয়েছে। এই নিরাপত্তা কাদের দেওয়া হয়েছে? ভোটারকে নাকি সরকারি দলকে? দখল দারিত্বের ভোট প্রদানের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল, যাহাতে তারা নিশ্চিতভাবে ভোটারের ভোট খেয়ানত করতে পারে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাচনে অন্যায়ের প্রতিবাদকারী, নির্যাতিত ভোটার মজলুম ও মহিলা ভোটারকে ভোট প্রদানে বাধা, মহিলা ভোটারকে লাঞ্চিত ও শ্লীতাহানী করে, তা নির্বাচনে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরব দর্শকের মতো উপলব্ধি করে ও উল্টো গ্রেফতার, হয়রানি ও ভোট কেন্দ্র থেকে ভোটার ও এজেন্টদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে।
অন্য দিকে, জুলুমবাজ, নির্যাতনকারী, দখলদার ইভিএম জাদুর বাক্স ও সন্ত্রাসীদের উৎসাহিত ও পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইভিএম মেশিন ‘আলাউদ্দিনের চেরাগ’ যার দখলে সে শতভাগ নির্বাচনে জয়, তাতে কোনো সন্দেহ নাই।
ভোটাররা কষ্ট করে দীর্ঘ লাইনের পর ইভিএম জাদুর বাক্সে তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দিতে গেলে গোপন বুথে ‘কনফার্ম’ সুইচ দখলদার দানব নিজেই ‘কনফার্ম’ সুইচ টিপ দিয়ে ভোটারদেরকে বলে, ‘ভোট হয়ে গেছে’। ভোটাররা নিশ্চুপ অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে! প্রতিবাদ করলে উল্টো গ্রেফতার ও লাঞ্চিত হতে হয়।
চসিক নির্বাচনে ভোটাররা যেভাবে তাদের ভোটের অধিকার হারিয়ে ফেলেছে, চট্টলাবাসীর অভিমত আগামী ৫০ বছরেও ভোটের অধিকার বাঙালি জনগণ পাবে না। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচনে ভোটারকে উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে ভোট প্রদানের জন্য আনতে পারবে না।
সরকার ও নির্বাচন কমিশন চসিক নির্বাচন সুষ্ঠ, অবাধ ও নিরপেক্ষ করলে সরকারের কোনো ক্ষতি হতো না। বরং এতে সরকারই লাভবান হযতো। সরকার ও নির্বাচন কমিশন এই ধরনের প্রহসনের ও পাতানো নির্বাচন না করে সংসদে আইন পাশ করে আজীবন সরকার, মন্ত্রী, এমপি, মেয়র নির্বাচিত করলে সরকারী সম্পদ, জনগণ হয়রানি ও নির্বাচনের অপব্যয় হতে মুক্তি পেত।
বাংলাদেশের মানুষ দখলদারিত্ব ও প্রহসনের নির্বাচন দেখতে চায় না। সবাই চাই, দেশে সুষ্ঠ, অবাধ, নিরপেক্ষ, প্রতিদ্বন্ধীতামূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক।
চসিক নির্বাচনের নব নির্বাচিত ‘নগরপিতা’ ও সব কাউন্সিলরকে অভিনন্দন ও শুভকামনা এবং চট্টলা ও নগরবাসীর উন্নয়নে কাজ করার জন্য আহ্বান জানাই।
লেখক: এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট অ্যান্ড জর্জ কোর্ট, চট্টগ্রাম