ঢাকা: ঢাকার ভাটারা থানার কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় গত ৩০ জুন মোহাম্মদ আসাদুর রহমান (৩৯) তার বাসার গৃহকর্মী কুলসুমা আক্তারকে (১৪) অসুস্থ অবস্থায় তার বোন ফাতেমা বেগমের কাছে রেখে যান। কুলসুমা আক্তারের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আগুনে পোড়া ক্ষতসহ বিভিন্ন দাগ দেখতে পায় বোন ফাতেম বেগম। পরে ফাতেমা কুলসুমাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে এবং এ বিষয়ে বাদী হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ভাটারা থানায় একটি মামলা করেন। গৃহকর্মীকে নির্মম নির্যাতনের এ ঘটনা ওই এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা তাৎক্ষণিকভাবে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে দ্রুত সময়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে দশটার দিকে র্যাব-১ এবং র্যাবের গোয়েন্দা শাখার একটি দল গোপন খবরের ভিত্তিতে ভাটারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত গৃহকত্রী মাহফুজা রহমানকে (২৫)গ্রেফতার করে। পিরোজপুর জেলার মোহাম্মদ আসাদুর রহমানের স্ত্রী মাহফুজা রহমান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কুলসুমা আক্তারকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে।
মুশফিকুর রহমান তুষার, সহকারী পুলিশ সুপার, র্যাব-১ জানান, কুলসুমা আক্তার ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর মাহফুজা রহমানের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে। বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করার পর থেকে সামান্য বিষয়ে মাহফুজা কুলসুমাকে মারধর করত। কাজে সামান্য ভুল করলেই লাঠি দিয়ে মারধর, প্লাস দিয়ে চুল ধরে টান দেয়া, রান্নার কাজে ব্যবহৃত খুন্তি আগুনে জ্বালিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত করাসহ বিভিন্ন উপায়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল। গত ১৫ জুন সকালে বাসায় ঘর পরিস্কার করতে দেরি হওয়ায় আসাদুর রহমান লাঠি দিয়ে কুলসুমার পায়ের উরুসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং মাহফুজা কুলসুমার চুলের মুঠি ধরে মারধর করতে থাকে। মারধরের এক পর্যায়ে আসাদুর রহমান গ্যাসের চুলার আগুনে রড় গরম করে কুলসুমার ডান পায়ের হাঁটুর নিচের অংশে চেপে ধরে এবং মাহফুজা রহমান কুলসুমার হাত গরম পানিতে চেপে ধরে। এতে কুলসুমার হাটুর নিচে আগুনে পোড়া ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং হাতের তালুতে ফোস্কা পড়ে। এমন শারীরিক নির্যাতনের ফলে কুলসুমা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তার বোনের কাছে পাঠিয়ে দেয় আসাদুর ও মাহফুজা।