চট্টগ্রাম: অঞ্চল ভিত্তিক কৃষি বহুমূখী ও কৃষিকে আরো লাভজনক করতে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ‘দেশের সব মানুষের জন্য নিরাপদ খাদ্য এবং পুষ্টির যোগান দিতে সমন্বিত চাষ বাড়াতে কর্মকর্তাদের আরো আন্তরিক হওয়ার পাশাপাশি কৃষকদের কাছে যেতে হবে। তাদের কথা শুনতে হবে।’
মন্ত্রী শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ হলে আয়োজিত চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মত বিনিময় সভায় এ নির্দেশনা দেন।
সভায় জেলাসমুহের আঞ্চলিক কর্মকর্তাগণ নিজ নিজ জেলার কৃষির বর্তমান অবস্থা সমস্যা সম্ভাবনা ও করণীয় তুলে ধরেন।
তারা বলেন, ‘দেশের প্রায় এক দশমাংশ এলাকা পাহাড়ে অবস্থিত। এসব পাহাড়ে প্রচলিত কৃষি পদ্ধতির পাশাপাশি অপ্রচলিত ফলের চাষাবাদ খুবই লাভজনক হবে। বিশেষ করে কাজুবাদাম, কফি ও ড্রাগন ফল উৎপাদনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে পাহাড়ী এলাকাগুলোতে। কাজুবাদাম ও কফির বাণিজ্যিক উৎপাদন করতে পারলে তা দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানীও করা যাবে। ফলে এ অঞ্চলে কৃষি চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হবে।’
কৃষি মন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলে কৃষি উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করতে ৭২৫ কিলোমিটার খালকাটা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কৃষিকে আধুনিকীকরণ ও বহুমাত্রিক করতে ২১১ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পের সুফল প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকের নিকট পৌঁছাতে হবে। প্রকল্পের সাথে কৃষকের যোগাযোগ বাড়াতে হবে।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষি উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়। তাও নিরসনের চেষ্টা চলছে। কৃষি শুধু মানুষের খাদ্যের যোগান দেয় না, শিল্পের কাঁচামালেরও অন্যতম উৎস কৃষি। তাই কৃষিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’
করোনা মহামারি মোকাবেলায় কৃষি অন্যতম সহায়ক খাত হিসেবে কাজ করেছে বলে এ সময় তিনি উল্লেখ করেন।
অঞ্চল ভিত্তিক কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনে মন্ত্রী বলেন, ‘যে অঞ্চলে যে ফসল ভাল হয়, তার ওপর জোর দিতে হবে। কৃষকের আয় বাড়াতে কৃষিপণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ বাড়াতে হবে। শুধু অফিসে বসে না থেকে কর্মকর্তাদের কৃষকের জমিতে যেতে হবে। তাদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ ও নির্দিষ্ট ফসলের ভবিষ্যত চাহিদা বোঝাতে হবে। তবেই কৃষি উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।
মত বিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে কৃষি সম্প্রারণ উইংয়ের সরেজমিন পরিচালক একেএম মনিরুল আলম, হর্টিকালচার উইংয়ের পরিচালক মো. ওয়াহিদুজ্জামান, অতিরিক্ত পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হুদা, রাঙ্গামাটি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক পবন কুমার চাকমা বক্তৃতা করেন।
খবর পিআইডির