চট্টগ্রাম: অভিনব কায়দায় কাগজের ভিতর লুকিয়ে বিদেশী ব্রান্ডের সিগারেট আমদানির দায়ে জেকে স্টেশনারী নামের একটি প্রতিষ্ঠানের একটি কনটেইনার জব্দ করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১২ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা রুখে দিল চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।
চট্টগ্রামের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জেকে স্টেশনারী (মায়ানীড়, পাঁচলাইশ) সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ‘এ ফোর’ সাইজের কাগজ ঘোষণায় এক কনটেইনার পণ্য আমদানি করে। ঝুঁকিপূর্ণ সিএন্ডএফ এজেন্ট, আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, বন্দর, পণ্য ও পণ্যের তৈরি দেশ বিবেচনায় কনটেইনার সংশ্লিষ্ট বিল অব ল্যাডিং এসাইকোডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ব্লক করে রাখে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ের জাবেল আলী বন্দর থেকে এমবি.এক্স-প্রেস নাপ্টস নামে জাহাজ যোগে সংশ্লিষ্ট কনটেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসলেও পণ্য খালাসের লক্ষ্যে কোন কার্যক্রম গ্রহণ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে সোমবার (১৫ মার্চ) নিয়ম অনুযায়ী ফোর্সড কিপ ডাউনের মাধ্যমে পণ্য পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর (অডিট, ইনভেস্টগেশন এন্ড রিসার্চ) টিম।
কনটেইনার থেকে সব পণ্য বের করে আনার পর দেখা যায়, ৪৮টি পলিথিনে মোড়ানো প্যালেটের প্রতিটিতে ৪৮টি কার্টুন রয়েছে, যার মধ্যে প্রথম আটটি প্যালেটে ছিল শুধুই কাগজ এবং নবম প্যালেট থেকে পরবর্তী প্যালেটগুলোতে ৪৮ কার্টুনের মধ্যে উপরের স্তরের ১২টি কার্টুনে শুধুই কাগজ এবং দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ স্তর পর্যন্ত ৩৬ কার্টুন খুলে উপরে এক রীম ‘এ ৪’ সাইজের কাগজ পাওয়া যায় এবং কাগজের নিচে আলাদা অন্য একটি কার্টুনে পাওয়া যায় অভিনব কায়দায় লুকানো সিগারেট।
কায়িক পরীক্ষায় ২৪ হাজার ৯৯০ কার্টুন/৪৯ লাখ ৯৮ হাজার শলাকা ‘ওরিস’ এবং ‘মন্ড’ ব্রান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়। এছাড়া ‘এ ৪’ সাইজের কাগজ পাওয়া যায় ১৩ দশমিক ৭ টন।
এআইআর শাখার সহকারী কমিশনার (এসি) রেজাউল করিম জানান, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস প্রশাসনের কঠোর নজরদারি এবং কর্মকর্তাদের নিষ্ঠা ও আন্তরিকতায় পূর্বের ন্যায় এ অপচেষ্টা নস্যাৎ করে দেয়া সম্ভব হয়েছে। পণ্যচালানটিতে শর্ত সাপেক্ষে আমদানিযোগ্য পণ্য সিগারেট আমদানি করে প্রায় ১২ কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি একই প্রক্রিয়ায় করিম ট্রেডিংয়ের আমদানিকৃত পণ্যচালান আটক করা হয় এবং কায়িক পরীক্ষায় ২৩ হাজার কার্টুন/৪৬ লাখ শলাকা ‘ইসি’ এবং ‘মন্ড’ ব্রান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়।