চট্টগ্রাম: বাংলাদেশে নব নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহ এমনকি ভুটান, নেপালসহ উপকৃত হতে পারে যেখানে বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ই লাভবান হতে পারে।’
চিটাগাং চেম্বারের সাথে মত বিনিময়কালে তিনি এ সবব কথা বলেন।
রোববার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে মত বিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ ২৫০ কোটি মানুষের বাজার, চট্টগ্রাম যেখানে প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বাণিজ্য, সামুদ্রিক ও উৎপাদন খাত চট্টগ্রামে অগ্রগণ্য। প্রতিবেশীদের সাথে দৃঢ় সম্পর্কের উপর আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উন্নয়ন নির্ভরশীল। তাই সেবা, উৎপাদন ইত্যাদি খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে বন্ধুত্বকে টেকসই করতে হবে।’
তিনি দীর্ঘ মেয়দীর পাশাপাশি দুই থেকে তিন বছর মেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং নির্দিষ্ট কয়েকটি সেক্টর যথা লজিস্টিকস, বন্দর, অবকাঠামো, যোগাযোগ ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
বিক্রম দোরাইস্বামী জানান, চট্টগ্রামে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনা ও বে-টার্মিনালে অর্থায়নসহ অবকাঠামো উন্নয়নে ভারতের আগ্রহ রয়েছে।
তিনি সীমান্তে আইসিডি, ওয়্যারহাউস নির্মাণ, রেললাইন উন্নয়ন ও স্থলবন্দরের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম উভয় দেশের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে ১০ বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, রাষ্ট্রদূত ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব করেন। এছাড়া সাগর ও অভ্যন্তরীণ নৌ-পথে মালামাল পরিবহন, রেলপথে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, স্থল বন্দরসমূহে জটিলতাসমূহ সহজীকরণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে পণ্য খালাসের গতি ত্বরান্বিত করা, ইলেক্ট্রনিক ডাটা বিনিময়ের মাধ্যমে স্থলবন্দরসমূহকে আরও বেশি ডিজিটালাইজ করা, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে সহায়তাকরণ, ভারত-বাংলাদেশ বার্ষিক বিজনেস কনফারেন্স আয়োজন, বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে যৌথভাবে ল্যাবরেটরী বা টেস্টিং সেন্টার স্থাপনের প্রস্তাব করেন চেম্বার সভাপতি।
চেম্বার পরিচালক এসএম. আবু তৈয়ব দুই দেশের জনগণের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন ও বাণিজ্য বৃদ্ধিতে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় উভয় দেশের পণ্য নিয়ে ‘ট্রেড শো’ আয়োজনের প্রস্তাব করেন।
চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ পেট্রাপোলে তিন চার দিন পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাক অপেক্ষমান থাকতে হয় উল্লেখ করে উভয় পক্ষের শুল্ক কর্মকর্তাদের সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং সীমান্ত এলাকায় আমদানিকৃত তুলা ও অন্য গার্মেন্ট কাঁচামাল সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ওয়্যারহাউস নির্মাণের আহ্বান জানান।
চেম্বার পরিচালক নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে পণ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সম্বলিত একটি ডেডিকেটেড ট্রেড পোর্টাল চালু করার অনুরোধ জানান।
চেম্বার পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর ব্যবসায়িক বিরোধ নিষ্পত্তিতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা বা এডিআর চালু করার উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং চেম্বারের বিশেষ উদ্যোগ বাংলাদেশ সেন্টার অব এক্সিলেন্সের সাথে ভারতীয় প্রথম সারির ম্যানেজমেন্ট স্কুলের যৌথ উদ্যোগে ব্যবসায়ী নির্বাহী উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানান।