চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটির পুরাতন টেলিগ্রাফ রোডস্থ আর্য্য সঙ্গীত সমিতির সুরেন্দ্র সঙ্গীত বিদ্যাপীঠের নতুন ভবন নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্থাপন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
আর্য্য সঙ্গীত সমিতির অধ্যক্ষ ও মুক্তিযুদ্ধের শব্দ সৈনিক ওস্তাদ মিহির লালার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ওস্তাদ নির্মলেন্দু চৌধুরী, কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, রুমকী সেনগুপ্ত, এডভোকেট শামসুল ইসলাম, শিল্পী শাহরিয়ার খালেদ, শাহ সেলিম খালেদ, মো. আবু ফরহাদ সাবু, কল্যাণ কান্তি নাথ ও কাজল দাশগুপ্ত প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মেয়র রেজাউল করিম বলেন, ‘সঙ্গীত এমন একটি শিল্প, যা শুধু মাত্র বিনোদনই নয়, যা থেকে সুর-তাল-লয়-বাণীতে হৃদয়ানুভূতিতে মন-প্রাণকে পরিশুদ্ধ করে এবং মানুষ যা কিছু মঙ্গল ও কল্যাণময় তার সংস্পর্শে প্রাণিত হয়। মুক্তিযুদ্ধে একজন যোদ্ধা হিসেবে সঙ্গীত আমাদের অন্তরে সশস্ত্র শক্তির জাগরণের আরেকটি হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল। দেশের প্রাচীনতম সঙ্গীতাশ্রম সেই অস্ত্র তৈরির প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখান থেকে প্রশিক্ষিত অনেক শিল্পী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কন্ঠ সৈনিক রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণে আগুনের পরশমণির ছোঁয়া দিয়েছিলেন। তাই আর্য্য সঙ্গীত সমিতি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি অনন্য হীরকখন্ড।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ সঙ্গীতাঙ্গনের প্রতিষ্ঠাতা সুরেন্দ্রনাথ এ উপমহাদেশে বরণীয় একজন সঙ্গীত পুরোধা মনীষী। সুরেন্দ্রনাথ আকাশবাণী কলকাতার প্রথম সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে চট্টগ্রামকে গৌরব মন্ডিত করেছেন। তিনি তৎকালীন সঙ্গীতাচার্য ওস্তাদ আলাউদ্দিন খানসহ অনেকের কাছের মানুষ ছিলেন। এরা সবাই আর্য্যসঙ্গীতে এসে এ মাটিকে ধন্য করেছেন। তাকে বর্তমান প্রজন্ম চেনে না, জানে না। অথচ তার নামে কলকাতায় সড়কের নামকরণ হলেও চট্টগ্রামে আর্য্য সঙ্গীতাশ্রমটি ছাড়া আর কিছুই নেই। দুঃখের বিষয় পৃষ্ঠপোষকতা, পরিচর্যা ও প্রণোদনার অভাবে প্রতিষ্ঠানটি কৌলিন্য হারিয়েছে। আমরা হারাতে বসেছি সঙ্গীত সুধার অমৃত সুরধারার ঐতিহ্যকে। একজন মুক্তিযোদ্ধা ও সঙ্গীতপ্রেমী হিসেবে এ জন্য আমি যন্ত্রণাবিদ্ধ। এ যন্ত্রণা প্রশমনে নগরীতে সঙ্গীতাচার্য সুরেন্দ্র নাথের নামে শুধু একটি সড়কের নামকরণ নয়, তার প্রতিষ্ঠিত আর্য্য সঙ্গীতকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় স্বীকৃতিতে অভিষিক্ত করতে আমি দৃঢ় প্রত্যয়ী।’