মাহতাব হোসাইন: আজ সোমবার ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ২০২২। বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭২ সালের এ দিনে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে রক্তস্নাত বাংলার মাটিতে পা রাখেন। তার প্রত্যাবর্তনে স্বাধীনতা সংগ্রামের বিজয় পূর্ণতা পায়। স্বয়ং বঙ্গবন্ধু তার এ স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদাররা বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তাকে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি করা হয়। বাঙালি যখন স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করে, বঙ্গবন্ধু তখন পাকিস্তানের কারাগারে প্রহসনের বিচারে ফাঁসির আসামি হিসেবে মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালিদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হওয়ার পর বিশ্ব নেতারা বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। আন্তর্জাতিক চাপে পরাজিত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত বন্দিদশা থেকে বঙ্গবন্ধুকে সসম্মানে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ২৯০ দিন পাকিস্তানের কারাগারে প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর প্রহর গননা শেষে লন্ডন-দিল্লি হয়ে তিনি ঢাকায় পৌঁছেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি।
বঙ্গবন্ধু হানাদারমুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন বিজয়ের মালা পরে। সে দিন বাংলাদেশে ছিল এক উৎসবের আমেজ। গোটা বাঙালি জাতি রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছিল কখন তাদের প্রিয় নেতা স্বাধীন দেশের মাটিতে এসে পৌঁছবেন। প্রচুর মানুষ সে দিন জড়ো হয়েছিল ঢাকা বিমানবন্দর এলাকায়। বিমানবন্দর থেকে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পর্যন্ত রাস্তা ছিল লোকে লোকারণ্য। স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধু। দীর্ঘ নয় মাস পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের গণহত্যার সংবাদ শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
সেদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো জনতার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘোষণা দেন, ‘রক্ত দিয়ে হলেও আমি বাঙালি জাতির এ ভালবাসার ঋণ শোধ করে যাব।’ এরপর প্রতি বছর কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি নানা আয়োজনে পালন করে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ‘মুক্ত স্বদেশে জাতির পিতা’ প্রতিপাদ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এ দিন বিকাল তিনটায় অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশনের শহিদ মনিরুল আলম মিলনায়তন থেকে সব টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। অনুষ্ঠানে বাবা ও মাকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার লেখা কবিতা আবৃত্তি করা হবে। আলোচনা পর্বে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস সম্বন্ধে আলোচনা করবেন বিশিষ্ট আলোচকবৃন্দ।
উল্লেখ্য, শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় তার সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন ও বিশেষ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। পরবর্তী করোনা পরিস্থিতির কারণে জনগণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি সর্বোচ্চ বিবেচনায় এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেন ও জনসমাগম এড়িয়ে অনুষ্ঠান আয়োজনের নির্দেশনা দেন। এর প্রেক্ষিতে ‘মুক্ত স্বদেশে জাতির পিতা’ প্রতিপাদ্যে সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ইতিহাস: ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারিতে লন্ডনে শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্য আমরা একটু দেখে নিতে পারি। “…আজ আমি স্বাধীনতার অপরিসীম ও অনাবিল আনন্দ অনুভব করছি। এ মুক্তি সংগ্রামের চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। আমার জনগণ যখন আমাকে বাংলাদেশের ‘রাষ্ট্রপতি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে তখন আমি ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’র দায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামী হিসেবে একটি নির্জন ও পরিত্যক্ত সেলে বন্দি জীবন কাটিয়েছি।… পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে বিচারের নামে প্রহসন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। শুনানি অর্ধেক শেষ হওয়ার পর পাক কর্তৃপক্ষ আমার পক্ষ সমর্থনের জন্যে একজন আইনজীবী নিয়োগ করে। আমি কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে ‘বিশ্বাসঘাতক’ এর কলঙ্ক নিয়ে মৃত্যুদণ্ডের জন্যে অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু সবচেয়ে বিস্ময়কর, আমার বিচারের জন্যে যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল, তার রায় কখনো প্রকাশ করা হবে না। সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বিচারের নামে প্রহসন অনুষ্ঠান করে আমাকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলানোর ফন্দি এঁটেছিলেন। কিন্তু ভুট্টো এ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে অস্বীকার করেন। ভুট্টো আমাকে না বলা পর্যন্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের বিজয় সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না। জেলখানা এলাকায় বিমান আক্রমণের জন্যে নিষ্প্রদীপ জারি করার পর আমি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কথা জানতে পারি। জেলখানায় আমাকে এক নিঃসঙ্গ ও নিকৃষ্টতম কামরায় বন্দী করে রাখা হয়েছিল, যেখানে আমাকে তারা কোন রেডিও, কোন চিঠিপত্র দেয় নাই। এমনকি বিশ্বের কোথায় কী ঘটছে, তা জানতে দেয়া হয় নাই।’
৮ জানুয়ারি পাকিস্তান সময় দুপুর তিনটায় রেডিও পাকিস্তান ঘোষণা করে যে, শেখ মুজিবের ইচ্ছানুসারে একটি বিশেষ পাক-বিমানে তাকে লন্ডনে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। তিনি লন্ডনের ক্লারিজস হোটেলে অবস্থান করছেন।
ওই সময় বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে যথাসম্ভব শীঘ্র লন্ডন থেকে ঢাকায় নিয়ে আসার আয়োজন করা হচ্ছে।’ ‘আগামীকালের মধ্যে শেখ মুজিবকে বাংলাদেশের জনগণের মাঝে পৌঁছে দিতেই হবে’ বলে জনাব চৌধুরী উল্লেখ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ঢাকা বিমানক্ষেত্রটি এখনো আন্তর্জাতিক বিমান অবতরণের উপযোগী হয়নি। তাই লন্ডন থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে হয়তো মাঝে কোথাও তার বিমান বদল করার প্রয়োজন হবে। আর আমরা জেনে থাকব, বঙ্গবন্ধু প্রয়োজনের তুলনায় এক মিনিটও বেশি লন্ডনে থাকেননি। ব্রিটিশ সরকার তাকে আরামে রাখার জন্য যথাসম্ভব ব্যবস্থা করেছিল। ৪০ বছর আগে গান্ধীজিকে তারা যেভাবে গ্রহণ করেছিলেন, এবার শেখ মুজিবকেও তারা সেভাবে গ্রহণ করেছেন। যদিও ব্রিটিশ সরকারের একজন মুখপাত্র এক দিন আগেই বলেছিলেন যে, শেখ মুজিব ব্রিটিশ সরকারের অতিথি নন; কিন্তু তবুও ব্রিটিশ সরকার তার প্রতি আতিথেয়তা দেখিয়েছেন ও প্রধানমন্ত্রী হিথ তার ব্যবহারের জন্য রাজকীয় বিমানবাহিনীর একটি বিমান দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ইয়াহিয়া খানের কাছে তিনি ধরা দিলেন কেন? অনেকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। কেন তিনি অজ্ঞাতবাসে গেলেন না? সে প্রশ্নও উঠেছিল। জবাবে বঙ্গবন্ধু জানান, ‘আমি তাও অস্বীকার করেছি।’ তিনি বলেছিলেন, যখন তার দেশবাসী বুলেটের আঘাতে প্রাণ দিচ্ছে তখন ভারতে পালিয়ে যাওয়াও তার কাছে ‘কাপুরুষতা’ বলে মনে হয়েছে।
কেমন ছিল ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারির দিনটি? শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন প্রতিক্ষণের ধারা বর্ণনা দিয়েছিলেন আকাশবাণীর দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, অসাধারণ আবেগময় কণ্ঠে গান গেয়েছিলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। সুধীন দাশগুপ্তের সুরে, আবিদুর রহমানের লেখা গান এখন ইউটিউবে পাওয়া যাচ্ছে।
‘বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে তোমার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায় তুমি আজ ঘরে ঘরে এত খুশি তাই।
কী ভাল তোমাকে বাসি আমরা, বল কী করে বোঝাই। এ দেশকে বল তুমি বল কেন এত ভালবাসলে, সাত কোটি মানুষের হৃদয়ের এত কাছে কেন আসলে, এমন আপন আজ বাংলায়… তুমি ছাড়া কেউ আর নাই, বলো, কী করে বোঝাই। সারাটি জীবন তুমি নিজে শুধু জেলে জেলে থাকলে আর তবু স্বপ্নের সুখী এক বাংলার ছবি শুধু আঁকলে তোমার নিজের সুখ-সম্ভার কিছু আর দেখলে না তাই, বলো কী করে বোঝাই।’
জেএন দীক্ষিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের প্রথম কূটনৈতিক প্রতিনিধি ও ডেপুটি হাইকমিশনার। পরবর্তী নব্বইয়ের দশকের শুরুতে তিনি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব নিযুক্ত হন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম তিন বছর ঢাকা থাকাকালীন তিনি বঙ্গবন্ধুকে কাছে থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ওপর ‘লিবারেশন অ্যান্ড বিয়ন্ড’ নামের একটি বই রচনা করেছেন, যাতে তিনি বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ওপর আগ্রহ-উদ্দীপক কিছু মন্তব্য করেছেন, যাতে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্বন্ধে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান ও মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়। দীক্ষিত তার বইয়ে লিখেছেন, ‘ঢাকায় বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠার পরপরই ভারত বাংলাদেশকে দুইটি সমুদ্রগামী জাহাজ ও দুইটি ফকার ফ্রেন্ডশিপ উড়োজাহাজ অনুদান হিসেবে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশকে নিয়ে শেখ মুজিবের আত্মসম্মান এতই প্রবল ছিল যে তিনি এ বাহনগুলো অনুদান হিসেবে গ্রহণ না করে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ নিয়ে কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।’
দীক্ষিত লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সূচনাতেই শেখ মুজিব গঙ্গার পানি বণ্টন ও ছিটমহল হস্তান্তরের প্রশ্নগুলো উত্থাপন করেন এবং ভারতের দখলিকৃত পাকিস্তানি সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ বাংলাদেশকে ফেরত দেওয়ার কথাটি তোলেন এ যুক্তিতে যে, সেগুলো বাংলাদেশের প্রাপ্য। তাছাড়া মুজিব এ যুক্তিও তুলে ধরেন যে, বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী পাকিস্তানি অস্ত্র ব্যবহারে অভ্যস্ত ও তাই সেগুলো বাংলাদেশের সেই সময়কার অনিশ্চিত অভ্যন্তরীণ অবস্থা মোকাবিলায় সহায়ক হবে।’
দীক্ষিতের কথায়, যদিও শেখ মুজিব জানতেন যে, বাংলাদেশের অস্তিত্বের সূচনার সেই দিনগুলোতে বাংলাদেশের ভারতীয় সাহায্য-সহায়তার প্রয়োজন, তবু তিনি চাইতেন না যে বাংলাদেশ ভারতের ওপর অতিরিক্ত মাত্রায় নির্ভরশীল হোক।
ইতিহাসের পাঠকরা ভাল করেই জানেন বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি লন্ডনে আসার আগে জুলফিকার আলী ভুট্টো নানা রকম আপস ফর্মুলা নিয়ে বৈঠকে করার চেষ্টা করেছিলেন। কোন রকম একটা সম্পর্ক রাখা যায় কি না সেই চেষ্টাও করেছিল। কিন্তু শেখ মুজিবের এ ব্যাপারে অবস্থান ছিল একেবারেই স্পষ্ট। ১১ জানুয়ারি ১৯৭২, দৈনিক পূর্বদেশ এর প্রতিবেদনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, ‘জাতির জনক ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে বহন করেছিল ব্রিটিশ রাজকীয় বিমান বাহিনীর কমেট জেট বিমানটি। বাংলাদেশ সময় একটা ৪১ মিনিটে বিমানটি ঢাকা বিমানবন্দরের ভূমি স্পর্শ করে।’ পরিশেষে, একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় লাভের দিন থেকে দেশের জনগণ একটি সংবাদের জন্য উন্মুখ হয়েছিল, কবে মুক্ত স্বদেশে ফিরে আসবেন বঙ্গবন্ধু।
তারপর খবর এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। খবর এল বঙ্গবন্ধু আসছেন। পাকিস্তান প্রবল বিশ্ব জনমতের চাপে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছে তাকে। লন্ডন ঘুরে তিনি ঢাকায় ফিরবেন ১০ জানুয়ারি। পরিবারের সদস্যরা, রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা অপেক্ষা করছেন কখন প্রিয়জনকে কাছে পাবেন। ১০ জানুয়ারি দুপুরে যখন দেশে নামেন নেতা, তখন বিমানবন্দর থেকে সোহরাওয়ার্দী ময়দান লোকে লোকারণ্য। সবাই আনন্দ করছেন, উৎসবের আমেজে বিজয়কে উদযাপন করছেন, অনেকে আনন্দে কাঁদছেন। সেই আবেগ বঙ্গবন্ধুকেও ছুঁয়েছিল। কিন্তু এত বিপুল জনসমর্থন, ভালবাসা আর অপেক্ষা দেখে বঙ্গবন্ধুর অনুভূতিতে কোন শব্দটি নাড়া দিচ্ছিল, তা বলতে তিনি একটি বছর সময় নেন। ১৯৭৩ সালের এ দিনে এসে তিনি বলেন, ‘আমি অভিভূত’।
লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক স্বাস্থ্য তথ্য, প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ রোগী কল্যাণ সোসাইটি।
পবা/এমএ