বৃষ্টি বড়ুয়া: আমি জানি, তোমার মাথায় বিরাট একটা ব্যামো আছে! যে ব্যামোটার কারণে তুমি হুটহাট আমায় বলে উঠ,
-শাড়ি পড়ে আসবে, প্লিজ?
কিংবা চুপচাপ বসে থাকলেও একটু পর পর বলে উঠ,
-ক্ষিদে পেয়েছে? কিছু খাবে? কিছু নিয়ে আসব তোমার জন্য?
তোমাকে না কিছুই বলা যায় না!
কোন পছন্দ বা কোন ভাল লাগার কথা শেয়ার করলেই তুমি শুধু বল, ‘কিনে দেই?’
আশ্চর্য ধরণের মানুষ তুমি!
তোমার চোখের সামনে কোন কাজ করতে চাইলে বল, ‘তোমাকে কে বলল কাজগুলো করতে? আমি আছি কাজগুলো করার জন্য! ওগুলো তোমার করা লাগবে না! বেশী কাজ দেখাতেও হবে না! তুমি শুধু আমার চোখের সামনে বসে থেক, তাহলেই হবে!’
তোমার জন্য কোথাও একা বসে থাকাই দায়!
হুটহাট আমায় খুঁজতে খুঁজতে চলে এসে পাশে বসে থাক! আর জিজ্ঞেস করলেই বল, ‘তোমার পাশে চুপচাপ বসে থাকতে ভাল লাগে তাই!’
তোমার চোখের আড়াল হলেই মেসেজের উপর মেসেজ দিতে থাক ‘তুমি কই?’ ‘কখন আসবে?’ ‘আমি এখানে আছি, চলে আস!’ আর এসব প্রশ্নের ‘কেন’ জানতে চাইলে বল, ‘তুমি আমার চোখের সামনে যা ইচ্ছে কর, আমার কোন সমস্যা নেই! কিন্তু তুমি চোখের আড়াল হলেই কেমন যেন লাগে!
আবার অসম্ভব কাজের চিন্তার মাঝেও এক হাতে মোবাইল টিপতে টিপতে অন্য হাতে হুটহাট আমার হাত খুঁজতে থাক! তারপর সেই হাত ধরেই বিনা কারণে বসে বসে কাজ সামলাতে থাক!
তুমি আসলে অসম্ভব রকমের বিরক্তিকর একটা মানুষ! সারা দিন শুধু আমার সাথে কথা বলার বাহানা খুঁজ! আর ‘ভালবাসি ভালবাসি’ বলতে থাক অবিরত!
সারা দিন কথা হোক বা না হোক! দিন শেষে তোমার সারা দিনের বকবকটা করা লাগবেই! সারা দিন কি করেছো? কোথায় গিয়েছ? কি খেয়েছ? কোথায় কি হয়েছে? কখন কি করবে? সব!! সবটা আমায় বলা লাগেই তোমার! এত কিছু বলার কারণ জানতে চাইলে বল, ‘তোমায় না বলে কাকে বলব?’
কখনো যদি রেগে কথা না বলতে বলি সেখানেও নাকি রাতে তোমার ঘুমই হয় না! আর জিজ্ঞেস করলে বল, ‘জান না!’
তুমি সত্যিই খুব খুব অসহ্যকর মানুষ! কারণ রাতের বেলা দশটা মিনিট কথা বলার অজুহাতে তুমি সকাল অবধি কথা বলার লোভ সামলাতে পার না! হোক সকালে তোমার যতই ব্যস্ততা! কথা তোমার বলা লাগবেই! না হলে ঘুমোবেই না!
এত জেদী, অসহ্য, বিরক্তিকর কেন তুমি? কেন বল?
এ মাথার ব্যামোটা কি তোমার কখনোই ঠিক হবে না?
লেখক: কবি, গল্পকার ও সংস্কৃতি কর্মী, চট্টগ্রাম